ইউরোপ: জার্মানিতে টিকা না নেওয়া ব্যক্তিদের বিধিনিষেধের বেড়াজালে আটকাতে ঐক্যমতে পৌঁছেছেন দেশটি জাতীয় ও আঞ্চলিক নেতারা। এর মাধ্যমে কার্যত টিকা নিতে অনিচ্ছুকদের জীবনযাপন নিয়ন্ত্রণ করা হবে। চলমান করোনা মহামারির চতুর্থ ঢেউ মোকাবিলায় দেশটির নেতারা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে শুক্রবার (৩ ডিসেম্বর) এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
এদিকে করোনা মহামারি মোকাবিলায় সুদূরপ্রসারী এই পদক্ষেপকে ‘জাতীয় সংহতিমূলক’ সিদ্ধান্ত বলে অভিহিত করেছেন জার্মানির বিদায়ী চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মেরকেল। এছাড়া আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে দেশজুড়ে করোনা টিকা বাধ্যতামূলক করা হতে পারে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
বিবিসি জানিয়েছে, জার্মান কর্তৃপক্ষের নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী- করোনা টিকার ডোজ সম্পন্ন করা ব্যক্তিরা অথবা খুবই সম্প্রতি যারা কোভিড-১৯ থেকে সুস্থ হয়ে উঠেছেন তারাই কেবল মুক্তভাবে চলাফেরা করতে পারবেন। তারা মুক্তভাবে রেস্টুরেন্টে কিংবা সিনেমা হলে যেতে পারবেন।
এর পাশাপাশি বিভিন্ন অবসর ও বিনোদনমূলক কর্মকাণ্ডে অংশ নেওয়ার অনুমতি ছাড়াও বাজারে এবং দোকানে গিয়ে প্রয়োজনীয় পণ্য কিনতে পারবেন। তবে করোনা টিকা দেননি এমন ব্যক্তিরা এসকল সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত হবেন।
জার্মানিতে করোনার চতুর্থ ঢেউ বেশ ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে দেশটিতে আরও ৩৮৮ জন মারা গেছেন। একই সময়ের মধ্যে ভাইরাসে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন প্রায় পৌনে এক লাখ মানুষ।
এছাড়া ইউরোপের এই দেশটিতে করোনার নতুন ধরন ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট ছড়িয়ে পড়ারও আশঙ্কা করা হচ্ছে। এমনকি আগামী কয়েক মাসের মধ্যে করোনার মোট সংক্রমণের অর্ধেকই ওমিক্রনে আক্রান্ত হতে পারেন বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা।
চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মেরকেল জানিয়েছেন, হাসপাতালগুলোতে রোগীদের চাপ বাড়ছে এবং চিকিৎসার জন্য বহু মানুষকে ভিন্ন এলাকায় যেতে হচ্ছে। করোনার চতুর্থ ঢেউকে অবশ্যই পরাস্ত করতে হবে এবং আমরা এটি এখনও করতে পারিনি।
মেরকেলের ভাষায়, ‘বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় করোনা টিকা বাধ্যতামূলক করা উচিত বলেই আমি মনে করি।’ তবে এটি কার্যকরে আগে পার্লামেন্টের অনুমোদন প্রয়োজন বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।
এদিকে অ্যাঙ্গেলা মেরকেলের পর পরবর্তী জার্মান চ্যান্সেলর হিসেবে দায়িত্ব নিতে চলেছেন ওলাফ শলৎস। আগামী বুধবার চ্যান্সেলর হিসেবে দায়িত্ব নিতে পারেন তিনি। ইতোমধ্যেই তিনি মেরকেলের এই পদক্ষেপে সমর্থন জানিয়েছেন।